Rolex Watch Price in Bangladesh
বাংলাদেশে রোলেক্স ঘড়ির দাম
ঘড়ি সাধারণত সবারই পছন্দের এবং শখের একটি জিনিস। তবে প্রত্যেকটি ঘড়ির মধ্যেই রয়েছে বিভিন্ন ধরনের দামের পার্থক্য এবং এবং তার সাথে মানের পার্থক্য। রোলেক্স ঘড়ির ব্র্যান্ড সম্পর্কে আমার কমবেশি সবাই অবগত। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে রোলেক্স অন্যতম জনপ্রিয় একটি ঘড়ির ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিত। এটি শুধুমাত্র একটি নাম নয় বরং এটি একটি বিশাল আভিজাত্যের প্রতীক।
এই রোলেক্স ঘড়ি যেমন মানের দিক দিয়ে বিশ্বসেরা এবং অন্য সকল ঘড়ির চেয়ে উন্নত, ঠিক তেমনভাবেই দামের দিক থেকেও অনেকটাই বেশি। এই ঘড়ি বাংলাদেশের প্রায় সকল মানুষেরই একটা স্বপ্নের মতো। আপনি যদি এই রোলেক্স ঘড়ির ব্র্যান্ড এবং বাংলাদেশে রোলেক্স ঘড়ির দাম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য অনেক বেশি কার্যকরী হতে চলেছে। তাহলে চলুন রোলেক্স ঘড়ির দাম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
বাংলাদেশে রোলেক্স ঘড়ির দাম
বাংলাদেশে রোলেক্স ঘড়ির দাম সাধারণত নির্দিষ্ট মডেল, বৈশিষ্ট্য এবং উপকরণের উপর নির্ভর করে থাকে। বেশিরভাগ এন্ট্রি লেভেল এর রোলেক্স ঘড়ির দাম তুলনামূলক কম হয়ে থাকে। কিন্তু আরো আপডেট রোলেক্স ঘড়ির মডেলের দাম উল্লেখযোগ্য ভাবে বেশি হয়। বাংলাদেশ এভেইলেবেল এমন কিছু জনপ্রিয় রোলেক্স ঘড়ির দাম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আপনি আমাদের এই কনটেন্টটি সম্পূর্ণ পড়তে থাকুন এবং এই ভিডিওটি দেখতে পারেন।
জনপ্রিয় কিছু রোলেক্স ঘড়ির দাম নিন্মে টেবিল আকারে দেয়া হলোঃ
১. Rolex Sky- Dweller Champagne Dial GMT 18K Yellow Gold Men’s Watch
এই ঘড়িটির কিছু স্পেশাল ফিচার:
রোলেক্স স্কাই- ডভেলার মডেলটিতে আপনি পাবেন বিশেষ ধরনের শ্যাম্পেন ডায়াল ফিচার।
এই ঘড়িটি অবিশ্বাস্য ১৮ ক্যারেট এর হলুদ সোনা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।
দুটি ভিন্ন টাইম জোন ট্র্যাক করার জন্য আছে GMT প্রক্রিয়া।
এই মডেলের ঘড়িতে আরও আছে একটি বার্ষিক ক্যালেন্ডার সিস্টেম।
এই ঘড়িটি ওয়াটারপ্রুফ হওয়ার কারনে আপনাকে পানিতে কিংবা আর্দ্র পরিবেশে কোন সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না।
রোলেক্সের ক্যালিবার ৯০০১ যান্ত্রিক কার্যকলাপ দ্বারা পরিচালিত।
আরামদায়ক ভাবে এই ঘড়িটি পরিধান করার জন্য রয়েছে রাউন্ড কমান্ড বেজেল।
এই মডেলের ঘড়িটির দাম: $৪৮,০০০ বা ৫২,৬৭,৮৮৪ টাকা (এছাড়াও এই মডেলের ঘড়িটির জন্য ভ্যাট এবং আমদানি ট্যাক্স প্রযোজ্য হবে)
২. Men’s Rolex Day-Date Platinum 41mm Watch with Diamond Roman Numeral Hour Markers
এই ঘড়িটির কিছু স্পেশাল ফিচার:
এই ঘড়িটিতে রয়েছে প্ল্যাটিনাম এর রোলেক্স ডে- ডেট মডেল।
কেসের আকার হলো ৪১ মিমি, যা আপনার হাতের সৌন্দর্য বর্ধন করতে সাহায্য করবে।
ঘড়ি টির ডায়ালে পেয়ে যাবেন ডায়মন্ড দিয়ে রোমান সংখ্যায় ঘন্টা চিহ্নিতকারী অপশন। এই ডায়মন্ডটি থাকার কারণেই ঘড়িটির লুক আরও বেশি এক্সপেন্সিভ হয়ে উঠেছে।
১০০ মিটার জল প্রতিরোধী ফিচার রয়েছে এই ঘড়িটিতে।
এই মডেলের ঘড়িটিতে রয়েছে অসাধারণ কারুকাজ এবং স্ট্যাটাস সিম্বল।
এটি একটি আইকনিক প্রেসিডেন্ট ব্রেসলেট হিসেবে পরিচিত।
এই মডেলের ঘড়িটির দাম: $৬৯,৯০০ বা ৭,৬৭১,৩৫৭ টাকা (এছাড়াও এই মডেল এর ঘড়িটির জন্য ভ্যাট এবং আমদানি ট্যাক্স প্রযোজ্য হবে)
৩. Rolex GMT-Master II Stainless Steel 18K Yellow Gold Watch Black Ceramic
এই ঘড়িটির কিছু স্পেশাল ফিচার:
স্টেইনলেস স্টিলের রোলেক্স GMT-মাস্টার II মডেলের ঘড়িটি ১৮ ক্যারেটের হলুদ সোনা দিয়ে তৈরি করা।
এখানে আরও আছে সোনার মার্কার সহ কালো সিরামিক বেজেল।
একাধিক টাইম জোন কন্ট্রোল করার ফিচার রয়েছে এই মডেলের ঘড়িতে।
স্টেইনলেস স্টীল এবং হলুদ সোনার আইকনিক মিশ্রণ এর মাধ্যমে এটি ম্যানুফ্যাকচার করা হয়েছে।
অত্যন্ত টেকসই এবং বিলাসবহুল ঘড়ি হিসেবে এটি পরিচিত।
রোলেক্সের ক্যালিবার ৩১৮৫ স্বয়ংক্রিয় ফিচার দ্বারা চালিত।
জলরোধী হওয়ার কারনে যেকোনো সময় পরিধান করে থাকা সম্ভব।
এই মডেলের ঘড়িটির দাম: $১৬,০৯৯ বা ১৭,৬৬,৮২৬ টাকা (এছাড়াও এই মডেলের ঘড়িটির জন্য ভ্যাট এবং আমদানি ট্যাক্স প্রযোজ্য হবে)
৪. Rolex Submariner Blue Dial Stainless Steel and 18K Yellow Gold Bracelet Automatic Men’s Watch
এই ঘড়িটির কিছু স্পেশাল ফিচার:
রোলেক্সের এই সাবমেরিনারের মডেলে রয়েছে একটি বিশেষ নীল ডায়াল সিস্টেম। যারা নীলপ্রেমী রয়েছেন তাদের জন্য এটি একটি পারফেক্ট চায়েজ হতে পারে।
স্টেইনলেস স্টীল এবং হলুদ সোনার আইকনিক মিশ্রণ এর মাধ্যমে এই ঘড়িটি ম্যানুফ্যাকচার করা হয়েছে।
অনেক সময় ধরে স্থায়িত্বতা এবং যেকোনো ধরনের স্ক্র্যাচ প্রতিরোধের জন্য সিরাক্রোম সিরামিক বেজেল রয়েছে।
রোলেক্স এই ঘড়িটি এই ব্র্যান্ডের বিশেষ কারুশিল্পীর মাধ্যমে নির্ভুলতার সাথে তৈরি করা হয়েছে।
আপনি যেনো এই ঘড়িটি খুব সহজেই পড়তে পারেন সেজন্য এখানে রয়েছে মার্সিডিজ এবং সাইক্লোপস ডেট ম্যাগনিফায়ার।
আরও আছে ৩০০ মিটার জল প্রতিরোধের সাথে আইকনিক ডাইভিং ঘড়ির নকশা।
গ্লাইডলক এক্সটেনশন সিস্টেম সহ অয়েস্টার ব্রেসলেট এর দারুন কম্বিনেশন খুঁজে পাবেন রোলেক্সের এই সাবমেরিনারের ঘড়ির মডেলে।
এই মডেলের ঘড়িটির দাম: $১৮,৬৫০ বা ২০,৪৬,৭৯২ টাকা (এছাড়াও এই মডেলের ঘড়িটির জন্য ভ্যাট এবং আমদানি ট্যাক্স প্রযোজ্য হবে)
৫. Rolex New Yacht-Master 116655 Black 18K Everose Gold
এই ঘড়িটির কিছু স্পেশাল ফিচার:
রোলেক্সের এই ইয়ট-মাস্টার মডেলের ঘড়িটিতে রয়েছে ১৮ ক্যারেটের এভারোজ গোল্ড কেস, যা দেখতে অসম্ভব রকমের সুন্দর।
অতিরিক্ত আরাম এবং অধিক সময় স্থায়িত্বের জন্য এই ঘড়িটিতে আছে Oysterflex ব্রেসলেট।
রোলেক্সের ক্যালিবার ৩১৩৫ স্বয়ংক্রিয় ফিচার দ্বারা চালিত হয়েছে।
রোলেক্স এই ঘড়িটি এই ব্র্যান্ডের বিশেষ কারুশিল্পীর মাধ্যমে নির্ভুলতার সাথে তৈরি করা হয়েছে।
এখানে আপনি আরও পাবেন একটি ম্যাট কালো Cerachrom সন্নিবেশসহ দ্বিমুখী ঘূর্ণন বেজেল।
এই মডেলের ঘড়িটির দাম: $৩৪,৮৯৫ বা ৩৮,২৯,৬৪২ টাকা (এছাড়াও এই মডেলের ঘড়িটির জন্য ভ্যাট এবং আমদানি ট্যাক্স প্রযোজ্য হবে)
বাংলাদেশে রোলেক্স ঘড়ির দাম সম্পর্কে প্রায়শই জিজ্ঞাসিত কিছু প্রশ্ন!
প্রশ্ন: রোলেক্স ঘড়ির দাম এত বেশি কেনো?
উত্তর: রোলেক্স ঘড়ির তৈরি করার জন্য এক বিশেষ ধরনের রোবট ব্যবহার করা হয়। সেই রোবটের সাহায্যে ঘড়ির বিভিন্ন পার্টসগুলো তৈরি করা হয়ে থাকে। তারপর নিখুঁতভাবে এই পার্টস গুলো অ্যাসেম্বল করা হয়। এত সূক্ষ্ম কাজের জন্য অনেক বেশি সময় দেওয়া লাগে, ধারণা করা হয়ে থাকে একটি রোলাক্স ঘড়ি বানাতে প্রায় এক বছর মত সময় লাগে। এই ঘড়ি ক্রেতাদের অনেক বছর পর্যন্ত খুব ভালো সার্ভিস দিয়ে থাকে। নির্মাতারা বলে থাকে যে রোলেক্স ঘড়ি গুলো প্রায় ৫ বছর থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা সম্ভব হয়। এছাড়াও এই ঘড়িগুলোতে সোনা, ডায়মন্ডের মতো বিভিন্ন দামি পার্টস লাগানো হয়ে থাকে, আর এজন্যই দাম তুলনামূলকভাবে বেশি।
প্রশ্ন: কোন দেশে সবচেয়ে কম দামে রোলেক্স ঘড়ি পাওয়া যেতে পারে?
উত্তর: সাধারণত সুইজারল্যান্ডে সবচেয়ে সবচেয়ে কম দামে রোলেক্স ঘড়ি পাওয়া যায়। এর একটি বিশেষ কারণ রয়েছে সেটা হলো, মূলত সুইজারল্যান্ডেই এই রোলেক্স ব্যান্ডের ঘড়ি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যার কারনে এই দেশে অন্যান্য দেশের তুলনায় তুলনামূলক কম দামে ঘড়িগুলো পাওয়া যায়। তবে এছাড়াও কখনো কখনো এই রোলেক্স ঘড়ির দাম ঘড়ির মডেল এবং বৈশিষ্ট্যের উপর নির্ভর করে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়ে থাকে।
প্রশ্ন: আপনার রোলেক্স ঘড়িটি আসল কিনা সেটা কিভাবে পরীক্ষা করবেন?
উত্তর: আপনার রোলেক্স ঘড়িটি আসল কিনা সেটা পরীক্ষা করার জন্য আপনি রোলেক্স এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ঘড়ির মডেলটি ভালোভাবে পরীক্ষা করে নিতে পারেন। এছাড়াও পানির মাধ্যমে আপনি আপনার ঘড়িটিকে পরীক্ষা করতে পারেন। কারণ সকল রোলেক্স ঘড়িগুলোই ১০০% ওয়াটার প্রুফ হয়ে থাকে। তাই আপনি ৩০ সেকেন্ডের জন্য ঘড়িটিকে এক গ্লাস পানির মধ্যে ডুবিয়ে রাখতে পারেন। এতে করে যদি দেখেন যে ঘড়ির ভেতরে কোন ধরনের পানি ঢুকেছে সেক্ষেত্রে বুঝতে হবে এটা নকল। আসল রোলেক্স ঘড়ি গুলোতে অনেক উন্নত মানের উপকরণ ব্যবহার করা হয় যার কারণে এগুলো তুলনামূলক ভারী হয়। তাই ওজন পরীক্ষার মাধ্যমেও আপনি আসল বা নকল ঘড়ি চিহ্নিত করতে পারবেন
প্রশ্ন: রোলেক্স ঘড়িতে কি ব্যাটারি আছে?
উত্তর: হ্যা, বেশ কিছু মডেলের রোলেক্স ঘড়িতে ব্যাটারি রয়েছে। যেকোনো প্রয়োজনে আপনি চাইলে ঘড়ি সার্ভিসিং এর দোকান থেকে রোলেক্স ঘড়ির ব্যাটারি পরিবর্তন করতে পারবেন। আবার এমন কিছু রোলেক্স মডেলের ঘড়ি রয়েছে যেগুলোতে ব্যাটারি নেই। সেসকল ঘড়িতে থাকা স্প্রিং গুলো খুবই সামান্য কম্পনের মাধ্যমেও কম্পিত হতে পারে। আর এই কম্পনের শক্তির মাধ্যমে প্রতিনিয়ত বছরের পর বছর ঘড়ি গুলো চলতে থাকে।
প্রশ্ন: রোলেক্স ঘড়িতে কি আসল সোনা ব্যবহার করা হয়?
উত্তর: হ্যাঁ, রোলেক্স ঘড়িতে আসল সোনা ব্যবহার করা হয়। রোলেক্স ঘড়ির দাম এত বেশি হওয়ার পেছনে এটি অন্যতম একটি কারণ। বেশিরভাগ রোলেক্স ঘড়িতেই ১৮ ক্যারেট এর সোনা ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও প্রায় ৭৫% খাঁটি সোনা এবং বাকি ২৫% কপার ও সিলভার ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
শেষ কথা!
রোলেক্স নিঃসন্দেহে এমন একটি ঘড়ির ব্র্যান্ড, যা ব্যবহার করা বাংলাদেশ এর বেশিরভাগ মানুষেরই স্বপ্ন হয়ে থাকে। এটি সারা বিশ্বের অন্যতম লাক্সারিয়াস এবং দামী একটি ব্র্যান্ড। আশা করি আমার আজকের সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি আপনি মনোযোগ সহকারে পড়েছেন। আর এটি সম্পূর্ণ পড়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের রোলেক্স ঘড়ির দাম সংক্রান্ত সকল বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। যেহেতু এই ঘড়ির দাম গুলো তুলনামূলকভাবে বেশি তাই ক্রয় করার আগে অবশ্যই সঠিকভাবে যাচাই বাছাই করে নিতে ভুলবেন না।