মেয়েদের সুস্থ জীবনযাপনের জন্য ১০ টি টিপস | Aponhut.com
মেয়েদের সম্পুর্ন সুস্থ জীবনযাপনের জন্য ১০ টি টিপসঃ-
২০২২ সাল এ এসে সুস্থ জীবনযাপন করা আমাদের জন্য কঠিন একটি কাজ হয়ে পড়েছে।তবুও শত ব্যাস্ততায় হোক নিজের শরীরের খেয়াল রাখা আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।বিশেষ করে মেয়েদের জন্য জন্য নিজের সুস্বাস্থ্য ধরে রাখা একটি চ্যালেন্জ হয়ে দাড়িয়েছে।নিচে কিছু টিপস এবং বিস্তারিত আলোচনা করবো যা একজন নারীকে নিজের শরীর সুস্থ এবং সবল রাখতে সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।
এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে একটি সঠিক রুটিন এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ।
নিচে কিছু টিপস এবং বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
০১) একটি নির্দিষ্ট ডায়েট রুটিন অনুসরন করা:
রাস্তার ধারে কিংবা রেস্টুরেন্টে পাওয়া সকল মুখোরোচক খাবার গুলো যেনো এক মুহুর্তের জন্য মুখে স্বাদের বন্য বইয়ে দেয় কিন্তু আমাদের স্বাস্থের জন্য এগুলো একদম উপযোগী নয়।একটু শাকসবজী ফলমূল সমৃদ্ধ খাবার নিমিষেই আমাদের সারাদিনের ব্যাস্ততার পরেও শরীরের প্রয়োজনীয় উপাদান দিতে পারে।তাই খাদ্যতালিকা হওয়া উচিত নিম্নরুপঃ
উপরের খাদ্যতালিকাটিতে মানবদেহের জন্য সকল প্রয়োজনীয় পুষ্টিউপাদান সঠিক পরিমানে রয়েছে যা আপনাকে একটু সুন্দর স্বাস্থ্য গঠনে সহায়তা করবে।এবং কেক, পেস্ট্রি,বিস্কুট জাতীয় খাবার অতিরিক্ত না খাওয়াই উত্তম, এগুলো আমাদের শরীরকে ঝুকিতে ফেলতে পারে।
২) নুন্যতম ৩০ মিনিটের মতো ব্যায়াম করা:
বর্তমান সময়ের বেশিরভাগ মহিলারাই কঠোর জীবনযাপন করেন যার ফলে হৃদরোগের ঝুকি বেড়ে যায় অনেকটাই, এই ঝুকি এড়ানোর জন্য ব্যায়ামের জুড়ি নেই।ব্যায়াম বলতে যে জিমে গিয়ে ব্যায়াম তেমনও নয় আমরা সাইকেলিং,সাতার কাটা,অ্যারোবিকস।মাত্র ত্রিশ মিনিট এগুলো অনুশীলনে হৃদরোগ,অস্টিওপরোসিস, ডায়াবেটিসের মতো রোগ গুলোর ঝুকি কমে।
৩) বি এম আই নির্ণয় করে পর্যবেক্ষণ করা এবং সঠিক বি এম আই বজায় রাখা:
BMI বলতে মানবদেহের চর্বির পরিমানকে বোঝায় বয়স এবং উচ্চতার সাপেক্ষে।নিম্নে বি এম আই তার তালিকা দেওয়া হলোঃ
এখন একটি আদর্শ বি এম আই ধরে রাখার জন্য আমাদের পরিকল্পনামতো সুষম খাদ্যাভাস গড়ে তুলতে হবে।প্রতিদিনের খাবারে প্রাকৃতিক উপাদান যেমন শাকসবজি, ফলমূল ইত্যাদি রাখতে হবে এবং একটু ব্যায়াম।
৪) নিয়মিত যোগব্যায়াম অনুশীলন করা:
আপনি হয়তো বাইরে কী ঘটছে তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না, তবে আপনার ভেতরে কি ঘটছে তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। এই মাধ্যমই হলো যোগব্যায়াম।সেই প্রাচীনকাল থেকে ভারতীয় সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ এই যোগব্যায়াম। ভারতীয়দের পাশাপাশি পশ্চিমারাও যোগব্যায়াম অনুশীলনে আগ্রহী হয়ে উঠেছে এর সুফলের জন্য।নিম্নে যোগব্যয়ামের কিছু সুফল দেওয়া হলোঃ
- মানসিক চাপ কমায় এবং দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেয়।
- আমাদের মনকে নিজের নিয়ন্ত্রণে আনতে সহায়তা করে।
- অনিদ্রা দুর করে।
এরকম আরো অনেক সুফল রয়েছে যোগব্যায়ামের।এটিই একমাত্র মাধ্যম যার ফলে আপনি আপনার শরীর এবং মনের মধ্যে যোগসাধন করতে পারবেন।
৫) প্রতিদিন পরিমাণমতো পানি পান করা:
আমরা সবাই জানি পানির অপর নাম জীবন।মানবদেহের ৬০% ই পানি। সুতরাং আমাদের জীবনকে আরও সুন্দর এবং স্বাস্থকে ভালো রাখার জন্য পানির বিকল্প নেই। ডাক্তাররা সাজেস্ট করেন একজন মানুষের কমপক্ষে ৩ লিটার পানি পান করা উচিত। নিজের শরীরকে হাইড্রেটেড রাখার অন্যতম পন্থা এটি।
পানি পান করলে এটি আমাদের পাচনতন্ত্র পরিষ্কার রাখে এবং মেটাবলিজম বাড়িয়ে ওজন কমাতে সাহায্য করে। পরিমানমতো পানি পান করার গুরুত্বপূর্ণ কিছু সুবিধা নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ
- শারীরিক কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বুষ্ট করে।
- কোষ্ঠকাঠিন্য দুর করে।
- পেটে পাথর হওয়া রোধ করে।
সুতরাং পরিমাণমতো পানি খাওয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। তাই আপনি যেখানেই যান না কেনো এক বোতল পানি নিয়ে যাবেন যা আপনাকে হাইড্রেটেড রাখতে সহায়তা করবে।
৬) অতিরিক্ত রোদ থেকে নিজেকে রক্ষা করা:
সুর্য হলো ভিটামিন ডি এর উতকৃষ্ট একটি উৎস।এটি আমাদের শরীর থেকে ক্যালসিয়াম শোসনে সাহায্য করে। তবে সুর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনী রশ্মি আমাদের ত্বকের উপর প্রচুর বাজে প্রভাব ফেলে।এর জন্য লোশন বা অতিবেগুনি রশ্মি প্রোটেক্টিভ লোসন, টুপি ইত্যাদি ব্যাবহার করা যায় যা আমাদের অতিরিক্ত সুর্যালোক থেকে রক্ষা করে।
৭) প্রতিদিন কমপক্ষে ৬-৭ ঘন্টা ঘুম:
ঘুম আমাদের সুস্বাস্থ্য গঠনের একটি অপরিহার্য জিনিস।যখন আপনি ঘুমানোর সময় পাবেন না দেখবেন আপনি অতিরিক্ত স্টেসফুল ফিল করছেন এবং নিজের মধ্যেই একধরনের আক্রমনাত্মক এবং খামখেয়ালি লাগবে।অলসতাও আপনাকে গ্রাস করে বসবে।
এটি যাতে না ঘটে সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখা উচিত। আপনার শরীরের পরিপুর্ণ বিশ্রাম দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যার ফলে আপনি সুন্দর এবং ফুরফুরে মন প্রাপ্ত হবেন।
৮) ধুমপান জাতীয় বদঅভ্যাস পরিহার করা:
ধুমপান এখন শুধু পুরুষেই সীমাবদ্ধ নয় অনেক নারীরাও এখন ধুমপানে আসক্ত। এটি অত্যন্ত ক্ষতিকারক একটি বদঅভ্যাস। এর ফলে মলদ্বারে ক্যান্সার এবং জরায়ুতে ক্যান্সার হতে পারে।সুতরাংমহিলাদের এ বিষয়টির দিকে খেয়াল রাখা উচিত।
৯) মাঝে মাঝে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া:
আমাদের শরীরে কখন কি ঘটবে কারও পক্ষে বলা সম্ভব নয়। তাই আমাদের সাপ্তাহিকভাবে ডাক্তাররের চেকাপ করানো উচিত যাতে আমাদের শরীরে রোগ বাসা বাধার আগেই আমরা সতর্ক হতে পারি। আমাদের সতর্কতার অভাবে পরে দেখা যায় ছোটো কোনো রোগই বড় কিছুর রুপ নিয়ে নেয়।
১০) নিজের মানসিক স্বাস্থ সম্পর্কে সচেতন হওয়া:
২২ এর শতকে বেশিরভাগ মানুষই কিছু না কিছু মানসিক সমস্যায় ভোগে যা আমাদের শরীরের উপর অনেকটাই প্রভাব ফেলে। তাই মানসিক স্বাস্থের দিকেও আমাদের নজর দেওয়া উচিত।যেমন কাজের ফাকে একটু কোথাও ঘুরতে যাওয়া,যোগব্যায়াম অনুশীলন করা।এগুলো আপনার স্ট্রেস কে কমিয়ে সুন্দর একটি ঘুমে সহায়তা করে।
অর্থাৎ উপরের টিপসগুলো অনুসরণ করলে একজন নারী তার প্রতিদিনকার ব্যাস্ত জীবনের পাশা পাশি সুস্থ এবং সুন্দর জীবনযাপন করতে পারবে।
এরকম আরো ব্লগ পেতে এখানে ক্লিক করুন।